একজন মুসলমানের আত্মবিশ্বাস কেমন হওয়া উচিত?
একজন মানুষ যখন বলে—“আমি পারবো না…” তখন সে শুধু নিজের ওপর নয়,অদৃশ্যভাবে সে আল্লাহর ওপরও সন্দেহ প্রকাশ করে। কারণ একজন মুসলমানের আত্মবিশ্বাস কেবল নিজের সামর্থ্যে নয়—তা আল্লাহর উপর নির্ভরতায় গাঁথা। একজন প্রকৃত মুসলমান যখন দাঁড়ায়, সে দাঁড়ায় পৃথিবীর সামনে নয়— আখিরাতের সামনে। তার আত্মবিশ্বাস মাটির নয়, তার আত্মবিশ্বাস আসমানের দিকে ওঠা দৃষ্টির মতো।
আপনারা শুনছেন Ummah Kantho… এখানে আমরা বলি—কীভাবে একজন ভাঙা মানুষ আবার নতুন করে নিজেকে গড়ে তোলে, কীভাবে ঈমান একজন সাধারণ ব্যক্তিকে পরিণত করে অভিনব সাহসে ভরা নেতৃত্বে।
চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন, আর আমাদের Facebook পেজেও যুক্ত থাকুন, যাতে আপনি প্রতিদিন আল্লাহর পথে ফিরে যাওয়ার নতুন এক শক্তি খুঁজে পান।
প্রশ্ন হচ্ছে—
“একজন মুসলমানের আত্মবিশ্বাস কেমন হওয়া উচিত?”
➤ না, সেটা অহংকার নয়।
➤ না, সেটা দম্ভ নয়।
➤ বরং সেটি এক ধরনের সৌম্য-সাহস—
যা আল্লাহর ওপর ভরসার মাধ্যমে গঠিত।
আল্লাহ বলেন:
“তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাকো, তবে আল্লাহর উপরই ভরসা করো।”
📖 সূরা আলে-ইমরান: আয়াত ১৬০
এই আয়াত আমাদের আত্মবিশ্বাসের মূল চাবিকাঠি।
আত্মবিশ্বাস আসে তখনই, যখন আপনি জানেন—“আমি একা নই, আমার সাথে আল্লাহ আছেন।”
একবার হযরত মূসা (আঃ)-কে ফিরআউন বললো—
“তুমি তো একা! আমার সৈন্য, সম্পদ, সিংহাসন—সব আছে। তোমার সাহস আসে কোথা থেকে?”
মূসা (আঃ) বললেন—
“আমার রব আমার সাথে আছেন। তিনিই আমাকে পথ দেখাবেন।”
📖 সূরা আশ-শু'আরা: আয়াত ৬২
এই একটি বাক্যই একজন মুসলমানের আত্মবিশ্বাসের সংজ্ঞা।
প্রিয় শ্রোতা,
আত্মবিশ্বাস মানে নিজের কণ্ঠে বিশ্বাস রাখা নয়, বরং নিজের কণ্ঠে সেই সত্য উচ্চারণ করা—যা আপনি জানেন, আল্লাহ সমর্থন করছেন। যখন সাহাবারা বদরের যুদ্ধে সংখ্যায় কম ছিল, তারা বলেছিল—
“হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'মাল ওয়াকীল।”
(আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, এবং তিনিই উত্তম অভিভাবক) 📖 সূরা আলে-ইমরান: আয়াত ১৭৩
এবং এই আত্মবিশ্বাস দিয়েই তারা জিতেছিল। কারণ তারা ভরসা করেছিল সংখ্যায় নয়—আল্লাহর সাথে সংযোগে।
আজকের মুসলিম সমাজে, আমরা আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি। কারণ আমরা ভরসা করেছি নিজের ডিগ্রি, পদ, অবস্থান— আল্লাহর প্রতিশ্রুতির বদলে। আর এইখানেই মুসলমানের পরাজয় শুরু হয়।
রাসূল ﷺ বলেছেন:
“যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা রাখে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট হন।”
📚 (তিরমিযি, হাদীস ২৩৪৪)
তাহলে আত্মবিশ্বাস মানে কি?
১. নিজের সীমাবদ্ধতাকে স্বীকার করা, কিন্তু তাও আল্লাহর শক্তির উপর নির্ভর করা।
২. মানুষের কথায় না ভেঙে পড়া, কারণ আপনি জানেন—আপনার নিয়তি আল্লাহর হাতে।
৩. চেষ্টা করে যাওয়ার সাহস রাখা, কারণ আপনি জানেন—সফলতা আসে আল্লাহর পক্ষ থেকেই।
একজন মুসলমান আত্মবিশ্বাসী হবে—কারণ সে জানে, তার পেছনে রয়েছে একটি শক্তি—যা পাহাড় সরাতে পারে, আসমানকে বৃষ্টি দিতে পারে, ভাঙা হৃদয়কে পুনরায় জোড়া দিতে পারে। আর সেই শক্তির নাম—"আল্লাহু আকবার!"
এই ছিল আজকের প্রথম পর্ব।
পরবর্তী পর্বে ইন শা আল্লাহ আমরা জানবো—কোন কোন ভুল ধারণা আমাদের আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে দেয়, আর কিভাবে নবী-রাসূল ও সাহাবাদের আত্মবিশ্বাস আমাদের জীবনের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে।
📢 আপনি যদি মুসলিম হিসেবে বারবার নিজের ভিতর ভেঙে পড়েন — মনে রাখুন, আত্মবিশ্বাস আল্লাহর দয়া ও কুরআনের আলোয় তৈরি হয়। সাবস্ক্রাইব করুন Ummah Kantho YouTube চ্যানেল ও যুক্ত থাকুন Facebook পেইজে, যেন আপনার আত্মবিশ্বাসও হয় ঈমানি শক্তির প্রতিচ্ছবি।
একজন মুসলমানের আত্মবিশ্বাস মানে অহংকার নয় — বরং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ এবং কুরআনের শিক্ষা দিয়ে নিজেকে গড়ে তোলা। বিশ্বাস করুন, আপনি যদি নিজেকে আল্লাহর বান্দা মনে করেন, তবে আপনার আত্মবিশ্বাস কখনো হারাবে না ইনশাআল্লাহ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন