তুমি বোরকা পড়ো? লোকে কী বলবে?
রোদে পুড়ছে শহরের রাস্তা, আর আপনি হাঁটছেন—একটি কালো বোরকা পরে, মাথা নিচু, চোখে হিজাবের পর্দা,
হাতে ব্যাগ…
পেছনে কেউ বললো—
"বোরকা পড়ে কী করবি? বুড়ি লাগতেছে!"
আরেকজন হেসে উঠলো,
আর আপনি কেবল চুপ করে সামনে হাঁটলেন…
এই চুপ করে থাকা,
এই মাথা নিচু করে এগিয়ে চলা,
এইটাই হলো একজন মুমিন নারীর সাহস।
আপনারা শুনছেন Ummah Kantho…
আমরা কণ্ঠ দেই সেই জায়গায়,
যেখানে একজন মুসলিম নারী নিজের ঈমান নিয়ে বাঁচে,
যেখানে একজন বোন আল্লাহর জন্য সমাজের কটুক্তিকে উপেক্ষা করে—
আলোর পথ ধরে হাঁটে।
চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন,
আর আমাদের Facebook পেজও ফলো করুন,
আল্লাহর দিকে চলার এই সফর একা নয়—
আমরা আছি আপনার সাথে।
একজন নারী যখন বোরকা পরে রাস্তায় বের হয়,
সে শুধু শরীর ঢেকে বের হয় না—
সে আল্লাহর পক্ষ থেকে দেওয়া সম্মান,
আত্মমর্যাদা, সাহস এবং ঈমান নিয়ে বের হয়।
তবুও মানুষ প্রশ্ন করে—
“তুমি বোরকা পড়ো? লোকে কী বলবে?”
আপনিও হয়তো একদিন নিজেকে প্রশ্ন করেছিলেন।
আল্লাহ বলেন:
📖 “হে নবী! তোমার স্ত্রীদের, কন্যাদের এবং মুমিন নারীদের বলো—
তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ দিয়ে নিজেদের ঢেকে রাখে।
এটাই তাদের পরিচয়ের জন্য উত্তম এবং যেন কেউ তাদের কষ্ট না দেয়।”
📚 সূরা আহযাব: আয়াত ৫৯
এই আয়াত কোনো পুরুষ লিখেনি।
এটা লিখেছেন সেই রব—
যিনি নারীদের সৃষ্টি করেছেন সম্মানের জন্য,
যিনি নারীদের শোষণের জন্য নয়,
বরং হিফাজতের জন্য পর্দা দিয়েছেন।
কিন্তু এই সমাজে,
যেখানে পর্দা নিয়ে ঠাট্টা হয়,
যেখানে বলা হয়— “মধ্যযুগীয় ভাব”,
“আধুনিক জামানায় এসব চলে?”
সেই সমাজেই একজন বোরকাপরা মেয়ে—
সবচেয়ে আধুনিক,
কারণ সে নিজের শরীরকে বাজারি চোখ থেকে বাঁচিয়ে
আল্লাহর সন্তুষ্টিকে সবচেয়ে বড় ফ্যাশন বানিয়েছে।
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন,
“যখন আয়াত নাজিল হলো পর্দার,
তখন আমরা নিজেদের মাথা ও বুক চাদর দিয়ে এমনভাবে ঢেকে ফেললাম—
যেন আকাশ থেকে সম্মানের কাপড় নেমে এসেছে।”
📚 সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৭৫০
তারা বলেছিলেন—
“আমরা নারীরা, রাসূল ﷺ-এর যুগে কোনো পুরুষের সামনে মাথা উঁচু করে চলতাম না।”
তাহলে আজ?
আজ আমাদের বোনেরা যখন বোরকা পরে,
তখন সে হায়ার ফ্যাশন নয়—
সুন্নাহর আত্মাকে পরিধান করে।
একজন মুসলিম নারীর আত্মবিশ্বাস এখানে—
যে সে জানে সমাজের ব্যঙ্গ থেমে যাবে,
কিন্তু আল্লাহর সন্তুষ্টি তার সাথে থাকবে চিরকাল।
বোরকা পড়া মানে—
• আত্মা আবৃত রাখা
• সৌন্দর্য সংরক্ষণ
• নিজেকে “শরীর” হিসেবে না দেখে “ইমানের পরিচয়” হিসেবে দেখা
আপনি যখন পথে হেঁটে যান বোরকা পরে,
মানুষ দেখে, ফিসফিস করে, হাসে…
কিন্তু আকাশের ফেরেশতারা আপনাকে সালাম জানায়—
কারণ আপনি আল্লাহর নির্দেশ পালন করছেন।
📖 আল্লাহ বলেন:
“তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ মানো—
তাহলেই তোমরা সফল হবে।”
📚 সূরা আনফাল: আয়াত ৪৬
এই সফলতা কোনো কলেজ ডিগ্রি নয়,
কোনো ট্রেন্ডিং মেকআপ নয়,
এই সফলতা সেই—
যা কিয়ামতের দিন আপনাকে জান্নাতের দরজায় নিয়ে দাঁড় করাবে।
প্রিয় বোন…
আপনি যেদিন প্রথম বোরকা পরেছিলেন,
হয়তো আপনার মা কেঁদেছেন,
বোনেরা বলেছে— “এই বয়সে কী বোরকা!”
বন্ধুরা বলেছে— “পেছিয়ে যাচ্ছিস।”
কিন্তু আপনি পেছিয়ে যাননি—
আপনি উপরে উঠেছেন।
আপনি হয়তো এই দুনিয়ায় একা হাঁটছেন,
কিন্তু কিয়ামতের দিন বোরকার ছায়ায় হেঁটে যাবেন
আল্লাহর সন্তুষ্টির পথ ধরে।
আপনার চেহারায় আবরণ,
কিন্তু মানুষের চোখে কৌতূহল।
আপনার শরীর ঢাকা,
কিন্তু তাদের ভাষা উলঙ্গ।
একজন মুসলিম নারী যখন বোরকা পরে—
সে নিজেকে রক্ষা করে,
আর সমাজ তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
“তুমি বোরকা পড়ো? লোকে কী বলবে?”
এই প্রশ্ন যেন প্রতিদিনের বিষাক্ত তীর।
কিন্তু প্রশ্ন হলো—
কে এই "লোক"?
যে লোক আজ হাসে, কাল ভোলে,
যার মন্তব্য একবার “ভালো” আর পরক্ষণেই “পাগল”,
সে কি আপনার হিদায়াতের মানদণ্ড হতে পারে?
আল্লাহ বলেন:
📖 "তোমরা যদি অধিকাংশ লোকের অনুসরণ করো,
তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে।"
📚 সূরা আন’আম: আয়াত ১১৬
এই সমাজ এমনই—
যখন আপনি হিজাব পড়েন,
তারা বলে— "বুড়ি লাগতেছে"।
যখন আপনি হিজাব ছাড়েন,
তারা বলে— "ধার্মিক ছিল, কী হলো?"
আপনি হাসেন, তারা বলে— "ঢং"
চুপ থাকেন, তারা বলে— "অহংকারী"
তাহলে আপনি কী করবেন?
আপনি মানুষের জন্য নয়, আল্লাহর জন্য বাঁচবেন।
একটা কথা মনে রাখুন—
লজ্জাশীলতা ও পর্দা কখনোই দুর্বলতার চিহ্ন নয়।
বরং এটি এক আত্মবিশ্বাস, এক অন্তরের বলিষ্ঠতা।
রাসূল ﷺ বলেন:
“লজ্জা ঈমানের অংশ।”
📚 (সহীহ বুখারী, হাদীস ৯)
আর হিজাব?
এটি তো লজ্জার দৃশ্যমান প্রকাশ।
যা বলছে—
"আমি আমার সৌন্দর্য লুকাই, কারণ আমি জানি, আমার রব আমাকে দেখছেন।"
❖ অনেকেই বলে—
"হিজাব তো অন্তরের বিষয়!"
হ্যাঁ, হিজাব আত্মার পরিশুদ্ধি থেকেই জন্ম নেয়।
কিন্তু কুরআন শুধু অন্তরের কথা বলেনি,
বলেছে—
📖 “তারা যেন নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে।”
📚 সূরা নূর: আয়াত ৩১
আর এই আয়াতের বাস্তব প্রকাশই হলো—
বোরকা ও পর্দা।
একবার রাসূল ﷺ-এর কাছে এক সাহাবি বললেন:
“ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি একজন নারীর সৌন্দর্য আকর্ষণ করতে দেখলাম।
আমি চোখ ফিরিয়ে নিতে পারিনি।”
রাসূল ﷺ বললেন:
“তুমি যদি নিজের চোখ সংযত না করো,
তাহলে শয়তান তোমার চোখ দিয়ে তোমার হৃদয় চুরি করে নিবে।”
📚 (মুসলিম, হাদীস ২১২৬)
এই হাদীস শুধু পুরুষের জন্য নয়,
এই হাদীস থেকে নারীও শিক্ষা নেবে—
আপনার সৌন্দর্য কারো চোখে ফেলা মানেই শয়তানকে সুযোগ দেওয়া।
❖ সমাজের চাপ আসে নানা রূপে:
– বন্ধুদের ঠাট্টা
– বাড়ির মানুষের গুঞ্জন
– সোশ্যাল মিডিয়ার ‘ট্রেন্ড’
– “তুমি পিছিয়ে যাচ্ছ” ধারণা
কিন্তু আপনি যদি জানেন—
জান্নাতে যাওয়ার রাস্তা মানুষের প্রশংসা দিয়ে নয়,
চলতে হয় আল্লাহর নির্দেশে।
তাহলে এই চাপ, এই কষ্ট—
আপনার তাওবার জ্বালানি হয়ে যাবে।
একজন মা তার মেয়েকে বলে—
“বোরকা পরে কোথাও বিয়ে হবে না।”
একজন বান্ধবী বলে—
“দেখতে তো বুড়ি লাগছে, কে চাইবে তোকে?”
একজন শিক্ষক বলে—
“তোমার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে এই পোশাকে।”
তারা কি জানে,
কোন পোশাক আল্লাহকে খুশি করে?
📖 আল্লাহ বলেন:
“মুমিন নারীদের বলো— তারা যেন তাদের চাহনি সংযত রাখে
এবং নিজেদের সৌন্দর্য গোপন রাখে।”
📚 সূরা নূর: আয়াত ৩১
এটাই বোরকা।
এটাই হিজাব।
এটাই একজন মুসলিম নারীর আত্মমর্যাদার মুকুট।
প্রিয় শ্রোতা,
আজকে সমাজের চোখ আপনাকে বিচার করবেই।
কিন্তু কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে দাঁড়ালে
তিনি আপনাকে জিজ্ঞেস করবেন না—
"কে কী বলেছিল?"
তিনি বলবেন—
"তুমি কী করেছিলে?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন